Advertisement

অনুপ্রেরণার বিশেষ রুপ ক্যারলি


 হার না মানা গল্প কেমন হতে পারে সেটা এই গল্প না পড়ে বুঝতে পারবে না। এমন একজন মানুষের জীবনী নিয়ে লেখা হয়েছে যেটা অনেকেই জানেন না হাংগেরিতে যে একজন ন্যাশনাল হিরো সেখানকার প্রতিটা মানুষের অনুপ্রেরণা এই মানুষটা। তার জীবনের এক অবিশ্বাস্য গল্প শুনে হাজার হাজার মানুষ জীবনে ঘুড়ে দাড়াতে শিখেছে। তারা একটা কথা মানে জীবন কোন সিমাবদ্ধতার দেয়ালে আটকে রাখার মতো কিছু না বরং জীবনের আসল অর্থ জীবন যুদ্ধে মোকাবেলা করা আর সীমাবদ্ধতার দেয়াল ভেঙ্গে চুরমার করে দেওয়া। 


ক্যারলি তাকাস নামের এক হাংগেরিয়ান লোক ছিলেন তিনি ছিলেন তার হাংগেরিতে সব থেকে ভালো শুটার সবকটি ন্যাশনাল প্রতিযোগিতায় জেতা হয়ে গিয়েছিল তার। তার ট্যালেন্ট দেখে সবাই তখন ধরেই নিয়েছিল যে ১৯৪০ সালের ন্যাশনাল অলিম্পিকের গোল্ড ম্যাডেল তিনিই অর্জন করবেন। ক্যারলি সেই ভাবেই নিজেকে গড়তে থাকে তখন তার একটাই স্বপ্ন সে পৃথিবীর সেরা শুটার হবে। সবকিছু ঠিকঠাক ভাবেই চলছিল সামনে আছে আর দুইটা বছর এর মধ্যে আরো শক্তিশালী করতে হবে সে জানে। ১৯৩৮ সালে আর্মিদের এক ক্যাম্প চলছিলো ক্যারলি একজন আর্মি ছিলো হঠাৎ এক দুর্ঘটনায় পরে যায় সে, যেই হাতকে সে পৃথিবীর সেরা শুটারের হাত বানাতে চেয়েছেন সেই হাত টাই গ্রেনেড বিস্ফোরণে উড়ে যায়। তার এতো বছরের সামর্থ্য, ইচ্ছা, শ্রম, স্বপ্ন সব কিছু এক মুহূর্তে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। তখন তার সামনে শুধু দুইটি রাস্তা খোলা ছিলো হয় সারা জীবনের মতো একজন হেরে যাওয়া মানুষ হয়ে বেঁচে থাকে না হয় সেই ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্নকে আবার জীবিত করবে। পৃথিবীকে দেখাবে একটি অসম্ভাবকে কিভাবে সম্ভাব করবে তিনি। তার যেটা আছে সেটা নিয়েই আবার স্বপ্ন দেখা শুরু করলো, আর যেটা নেই সেটার দুঃখ ভুলতে শুরু করলেন। 


এতো কিছুর পরেও সে একজন সেরা শুটার হতে চান তার কাছে স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখার মতো ছিল তার একটি হাত তথা তার বাম হাত। যে হাতে সে লিখতেও পারত না ক্ষতিগ্রস্ত হাতের চিকিৎসা চলে ১ মাস ধরে তিনি আবার ট্রেনিং শুরু করে দেয়। এক বছর পরে ১৯৩৯ সাল তিনি আবার ফিরে আসে প্রতিযোগিতার মাঠে। হাংগেরিতে ন্যাশনাল শুটিং শুরু হয় সেখানে দেশের সেরা সেরা শুটার আসে প্রতিযোগিতার অন্যান্য শুটার তাকে দেখে অভিনন্দন জানায়। ক্যারলিকে দেখে সবাই বলে এই হলো আসল হিরো যে এই অবস্থায় আমাদের অনুপ্রেরণা দিতে এসেছে। মজার ব্যাপার হলো তখন কেউ জানে না যে ক্যারলিও একবছর শুটিং করেছে। তাদের প্রতি উত্তরে ক্যারলি বলে আমি এখানে তোমাদেরকে অনুপ্রেরণা দিতে আসিনি আমি তোমাদের প্রতিযোগী। প্রতিযোগিতা শুরু হলো সবাই নিজ নিজ শক্তি দিয়ে চেষ্টা করলো আর ক্যারলি তার বাম হাত দিয়েই শুটিং করলো। একহাতের দৃঢ় মনোবলই তাঁকে জয়ী বানিয়ে দিলো কিন্তু এখানেও সে থেমে থাকেনি কারন তার যে ইচ্ছা সে পৃথিবীর সেরা হবে। এর পরে সে ১৯৪০ সালের অলিম্পিকের জন্য মনোনিবেশ করে কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের কারনে বাতিল হয়ে যায়। সে তাকিয়ে থাকে ১৯৪৪ সালের দিকে কিন্তু সেটাও যুদ্ধের কারনেই বাতিল হয়ে যায়। তার সামনে এখন অপেক্ষা ১৯৪৮ সালের অলিম্পিকের দিকে। 


যদিও ২৮ বছরের তরুন শুটারটি এখন ৩৮ বছর বয়সি হয়ে গেছে তরুন প্রতিযোগিতাদের সাথে টিকে থাকাটা তখন কঠিন হয়ে পরে। কিন্তু তার দৃঢ়তার কাছে সব কিছু তুচ্ছ বলে মনে হলো অলিম্পিক ঘিরে সারা দেশের বাঘা বাঘা শুটারদের সাথে এখন লড়তে হবে। আবার তার একহাতের দৃঢ় মনোবলই তাঁকে জয়ী বানিয়ে দিলো। তাও তিনি থামেন নি ১৯৫২ সালের আবার তিনি জয়ী হন পর পর চার বার তিনি অলিম্পিকের গোল্ড ম্যাডেল জিতেন। ব্যার্থতার হাজারটা কারন ও ওজুহাত থাকে কিন্তু সফলতার একটাই কারন ইচ্ছা শক্তি। ইচ্ছা শক্তি আপনাকে দিয়ে এমন কিছু করাতে পারে যা অপাত দৃষ্টিতে অসম্ভব। 


যারা বলেন আমার ইচ্ছা শক্তি আছে কিন্তু করতে পারছি না, কারন এটা, কারন ওটা কিন্তু আমি বলবো আপনার ইচ্ছা শক্তি এখনও ততোটা শক্তি অর্জন করতে পারেনি যেটা দিয়ে কাজ করা সম্ভব।

Post a Comment

0 Comments